কৃষি ভিসায় ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে পরিবারের কাছে থেকে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় কল্পনা বেগম (৩৬) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি মানবপাচার চক্রের সদস্য।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বুধবার রাতে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে কল্পনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হাতিরঝিল থানা সূত্রে জানা গেছে, মো. নুরুল ইসলাম বেপারী নামে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার এক বাসিন্দা গত ২ অক্টোবর বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে কল্পনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী বলেছেন, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে কল্পনা বেগম ও তার সহযোগীরা কৃষি ভিসায় ইতালি পাঠানোর কথা বলে নুরুল ইসলামকে প্রলুব্ধ করে। তাদের প্রলোভনে পড়ে নুরুল তাদের পাসপোর্ট দেন। কয়েকদিন পর চক্রের সদস্যরা বাদীকে জানায় তার ভিসা হয়েছে।
তাদের কথা মতো, গত ২০ জুলাই বাদী তাদের ১০ লাখ টাকা দেন। টাকা পাওয়ার পর মানবপাচার চক্রের সদস্যরা নুরুল ইসলামকে প্রথমে দুবাই ও পরে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে চক্রের সদস্য জামির ও ইসমাইল ভুক্তভোগীকে ইতালি না পাঠিয়ে জিম্মি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।
তারা নুরুলের স্ত্রীকে ফোন করে জানায়, বাংলাদেশে ফিরতে চাইলে বা ইতালি যেতে চাইলে দেশে থাকা তাদের সদস্য আব্দুল লতিফের কাছে আরও ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগীর স্ত্রী জমি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা দেশে থাকা পাচারকারী চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ও বিকাশের মাধ্যমে দেন। টাকা পাওয়ার পরও তারা ভুক্তভোগীকে দেশে বা ইতালি পাঠায়নি। পরবর্তীতে গত ১১ জুন লিবিয়া পুলিশের সহায়তায় ছাড়া পেয়ে নুরুল দেশে ফেরেন।
তদন্তাধীন মামলায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় এজাহারনামীয় আসামি কল্পনা বেগমকে বুধবার রাতে কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও মানবপাচারে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় থানা সূত্রটি।